সোমবার, ১৮ জুন, ২০১২

ফলোআপ সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা প্রশাসন ও আওয়ামীলীগের হস্তক্ষেপে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার ও মাছের ঘের বন্ধ ঘোষণা!

কালকিনি অফিস :
কালকিনি পৌরসভার ঝুরগাঁ, নয়াকান্দি, খলিসাডুবি ও পাতাবালী ইরি ব্লকের ৪ গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুইশ’ বিঘা জমি দখল করে মাছের ঘের করার জন্য উপজেলা যুবলীগ সভাপতির ভাই সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হুমকি দিয়ে জোর করে ষ্টাম্পে সাক্ষর নেয়ার অভিযোগের সংবাদ সাপ্তাহিক কালকিনি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে উপজেলা প্রশাসন ও আওয়ামীলীগের টনক নড়ে। এতে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে চার গ্রামের লোকজন ডেকে মাছের ঘের ও নিরহ মানুষের ওপর নির্যাতন বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের বন্ধ ঘোষণা দিয়েছেন। ঘের বন্ধের কথা শুনে এলাকাবাসী আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করেছেন।
সরেজমিন ও ভুক্তভোগীদের সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মনিরুজ্জামান হাওলাদারের ছোট ভাই রিফাত হোসেন হাওলাদার, মাখন লাল বল, মুরাদ হোসেন বেপারীসহ সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুইশত বিঘা জমি দখল করে মাছের ঘের করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে অত্যাচার করে ষ্টাম্পে স্বাক্ষর করাচ্ছেন। একেক জনকে আলাদাভাবে আটকিয়ে মারধর করে জোর জবরদস্তি এ কাজ করছেন বলে সংখ্যালগু সম্প্রদায় সাপ্তাহিক কালকিনিকে জানিয়ে ছিলেন।
গত ১১ জুন সাপ্তাহিক কালকিনি খবরটি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে উপজেলা প্রশাসন ও আওয়ামীলীগের যৌথ উদ্যোগে ১৪ জুন ঝুরগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ৪ গ্রামের মানুষ জনকে উপস্থিত করে ঐ এলাকায় ঘের হওয়া-না হওয়ার ব্যাপারে কন্ঠভোট নেয় এতে হিন্দু মুসলিম সকলে একযোগে না বলেন। সকলের উপস্থিতিতে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ শাহরিয়াজ ঘোষণা করেন এই ৪ গ্রামে মধ্যে কেউ মাছের ঘের করতে পারবেনা যেহেতু ঘেরের পক্ষে কেউ নেই। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপিকা তহমিনা সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক, সহ-সভাপতি খায়রুল আলম খোকন বেপারী, মতিন সরদার, যুবলীগ সভাপতি মনির হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক সরদার, ইমারত নির্মাণ ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি, সরদার মোঃ লোকমান হোসেন, বিআরডিবি’র চেয়ারম্যান মসিউর রহমান সবুজ, পৌর কৃষকলীগের সভাপতি মস্তফা ঘরামী, লক্ষন শিকদার, সনাতন মাষ্টার, পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ দাদন সরদার ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
যুবলীগ সভাপতি মনিরুজ্জামান হাওলাদার উপস্থিত সকলকে বলেন, আমার ভাই এখানে মাছের ঘের করতে এসেছে- আপনারা কেন আমাকে জানাননি আমি জানলে এত ঘটনা ঘটতে পারতো না। আপনারা যখন ঘের চাইছেন না তখন কেউ এখানে মাছের ঘের করতে পারবে না।
সরদার মোঃ লোকমান হোসেন ও মসিউর রহমান সবুজ বলেন, হিন্দু সম্প্রদায় আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত, এদেরকে যারা অত্যাচার নির্যাতন করে তারা কেউ দলের মঙ্গল চায়না । অতএব দ্বিতীয়বার ঘেরের নাম নিলে তাদেরকে দাতভাঙ্গা জবাব দিয়ে আইনের হাতে তুলে দেয়া হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক,বলেন, এখানে কোন ব্যাক্তি বা কোন গোষ্টি মাছের ঘের করতে পারবেনা। এর পর  সংখ্যালগু সম্প্রদায়ের উপর যারা অত্যাচার নির্যাতন চালাতে আসবে তাদের আইনের হাতে তুলে দেয়া হবে।     

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন