শহিদুল ইসলাম :উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের আলোচিত ইজিবাইক চালক হাসান বেপারী ওরফে কিসলু বেপারী খুনের কোন রহস্য পুলিশ উদ্ঘাটন করতে পারেনি। তবে পুলিশের ভাষ্য, ঢাকা থেকে ময়নাতদন্তের রির্পোট না আসায় আমরা মামলার ব্যাপারে কিছু করতে পারছিনা। নিহত পরিবারের দাবী, একটি মহল হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে অতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই পুলিশ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের দোহাই দিয়ে সময়ক্ষেপন করছে।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাহেবরামপুর ইউনিয়নের ক্রোকিরচর গ্রামের মতিউর রহমান বেপারীর ছেলে ইজিবাইক চালক হাসান বেপারী নতুন বাড়ীতে বিদ্যুৎ না থাকায় তার পুরাতন বাড়ীতে রাস্তার পাশে বাঁশ ও পাটখরি দিয়ে একটি ঘর নির্মাণ করে, সেখানে প্রতিদিন ইজিবাইকের ব্যাটারীতে চার্জ দিত। ওই ঘরে গত ২৩ অক্টোবর সকালে তার মা সিরিনা বেগম গিয়ে দেখতে পান হাসান বেপারীর মাথায়-পায়ে রক্ত, নিস্তেজ শরীর পড়ে আছে। স্থাানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সেলিম শুনতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে ওসি শাহীন মন্ডল, এস আই আশফাকসহ সঙ্গিয় র্ফোস নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে পাঠায়। এরপর গত ৬ মাসেও তার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পুলিশ পায়নি বলে দাবী করছেন। এই অজুহাতে পুলিশ তদন্তকার্যক্রম স্থগিত রেখেছে।
এ ব্যাপারে নিহতের বাবা মতিউর রহমান বেপারী বলেন, “হাসান ইজিবাইক চালাইয়া সংসার, ভাই-বোনের লেখাপড়াসহ সব ধরণের খরচ চালাইতো। খুন হওয়ার সময় তার কাছে ২ হাজার ৩ শ’ টাকা ছিল, পুলিশ তা মামলার কাজে লাগবে বলে নিয়ে গেছে। আমরা গরিব হওয়ায় মামলার খোঁজ খবর নিতে পারি না, চেয়ারম্যানের কাছে গেলে সে বলে ময়নাতদন্তের রির্পোট আসে নাই, দেরী হবে।”
হাসানের বোন ডলি আক্তার রাবেয়া বলেন, “আমি সাহেবরামপুর কবি নজরুল ইসলাম কলেজে পড়ালেখা করতাম, আমার ভাই খুন হওয়ার পর থেকে তা বন্ধ হয়ে গেছে। আল্লাহর কাছে দোয়া করবো, যাতে আর কারো বোনের ভাইকে এভাবে হারাতে না হয়। টাকা না থাকায় পুলিশও আমার ভাইয়ের মামলার আসামীদের আটক করছে না। ময়নাতদন্ত রির্পোট হাসপাতাল থেকে আসে নাই বলে আমার ভাইয়ের মামলার কোন অগ্রগতি নাই। কিন্তুু আমার প্রশ্ন, ময়নাতদন্ত রির্পোট আনার দায়িত্ব কার, আমাদের না পুলিশের।”
সাহেবরামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, “হাসানের মৃত্যুটা একটা এ্যাকসিডেন্ট, সে বিদ্যুৎ ষ্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে, তার মৃত্যুর ব্যাপারে আমিও তদন্ত করেছি কিন্তুু কিছুই পাওয়া যায় নাই।”
থানার অফিসার ইনচার্জ এ.কে.এম শাহীন মন্ডল জানান, “হাসান খুন হয় নাই, তাই তার মামলাটি ইউডি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকার মহাখালী হাসপাতালে ভিসেরা রির্পোটের জন্য পাঠানো হয়েছে, সেই রির্পোট না আসা পর্যন্ত আর কিছুই বলা যাবেনা।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন