সোমবার, ১৪ মে, ২০১২

কালকিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিসসহ দুই জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ

শহিদুল ইসলাম  :
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিস ও বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের মধ্যচর গ্রামের একটি বাড়ীতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। থানায় এ ব্যাপারে পৃথক সাধারণ ডায়রী করা হয়েছে। রবিবার এ ঘটনা ঘটার পর থেকে এলাকায় এখনো থমথমেভাব বিরাজ করছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিসের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 
ইউএনও অফিস ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাত ১২টায় উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারি অফিসে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ককটেল দুটি অফিসের বারান্দায় বিস্ফোরিত হয় এবং এতে টাইলস আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তবে এ সময় অফিসে কেউ ছিল না।
কর্তব্যরত নৈশ প্রহরী জামাল হোসেন, হারুন ও মোকছেদ জানান, ‘১২টা ১০ মিনিটের সময় অফিসের উত্তর পাশে কালকিনি- কাশিমপুর সড়কের উপর একটি মটরসাইকেল ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ডর জন্য থামে। এরপরই ককটেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ হয়। মূহূর্তের মধ্যে মটরসাইকেলটি উধাও হয়ে যায়।’
এ ঘটনার পরপরই পুলিশ থানায় সাধারণ ডায়রী করেছে। পরে থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে পুলিশের টিম রাতে পৌর এলাকার জোনারদন্দি গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি করে। এ সময় লিটন নামের এক যুবককে আটক করে তার ঘর থেকে বের করলে লিটন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মুঠোফোনে লিটন জানান, ‘মামলা না থাকলেও আটকের কারণ জানতে চাইলে পুলিশ আমাকে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর হুমকী দিলে ভয়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি।’ যোগাযোগ করা হলে থানার অফিসার ইনচার্জ শাহীন মন্ডল জানান, ‘বিস্ফোরিত ককটেলের যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই রহস্য উৎঘাটনের জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।’
ইউএনও শাহরিয়াজ বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মর্মাহত ও আতংকিত। আমরা জিডি করতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যানই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। উপজেলা পরিষদের চত্ত্বরে  চারদিকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’
উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক দাবী করেন, ‘শনিবার দুপুরে পৌরসভার দুই কাউন্সিলরের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কালকিনি থানার এসআই নুর হোসেন পৌরসভার মেয়র এনায়েত হোসেনের কাছে ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে এনায়েত হোসেন বলেন- কাউন্সিলর তোফাজ্জেল হোসেন দাদন হল আমার লোক আর কাউন্সিলর আকমল বেপারী উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুকের লোক, আমি ইচ্ছা করলে ১০ মিনিটের মধ্যে উপজেলা চেয়ারমানের অফিস গুড়িয়ে ফেলতে পারি।’
এ ব্যাপারে এনায়েত হোসেন বলেন, ‘এসআই নুর হোসেনের কাছে এ ধরণের কোন কথা আমি বলিনি। কেউ প্রমাণও দিতে পারবে না। উপজেলা চেয়ারম্যানের দাবী সম্পূর্ণ অসত্য। আমাকে ফাঁসানোর জন্য এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। রাতেই পুলিশ আমার বাড়িসহ এলাকায় তল্লাশী করেছে। এমনকি পুলিশ জিডি নিয়েও লুকোচুরি করছে।’  
এনায়েত হোসেনের সাথে কথা বলার সময় অন্য কেউ উপস্থিত ছিল কি-না জানতে চাইলে এসআই নুর হোসেন বিষয়টি এড়িয়ে যান, তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
এ ঘটনায় সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফরিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আওয়ামীলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সাথে মিটিং করেন।
এদিকে রবিবার দুপুর ২টায় উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মধ্যচর গ্রামের বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের মধ্যচর গ্রামের রফিজউদ্দিন বেপারীর ঘরে দুবৃত্তরা একাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে তার ঘরের সম্পূর্ণ অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন